কচিখালি অভয়ারণ্যেঃ
প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণী উপভোগের আশ্চর্য সুন্দর ভ্রমণ স্থান কচিখালি অভয়ারণ্যে । কটকার পূর্ব পাশে শরণখোলা রেঞ্জের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় নয়নাভিরাম এই কচিখালির অবস্থান।
খালের এপাশ ওপাশ মিলে রোমাঞ্চকর কচিখালির ডাঙ্গায় দেখা মেলে চিত্রা, মায়া হরিণ এবং আছে বানর,শুকর৷ জলে প্রায় দেখা যায় কুমির আবার কখনো বা ডলফিন। মদন টাক (হাড়গিলা) সহ হরেক রকম পাখির দেখার উতকৃষ্ট স্থান এই কচিখালিতে।
অদ্ভুৎ সুন্দর ছোট খাল ধরে সঙ্গে থাকা দেশী নৌকায় কিছুদূর যেয়ে বন রক্ষীদের নির্মিত কাঠের জেটি। সেখান থেকে বনের মধ্য দিয়ে ইট সোলিং রাস্তা পেরিয়ে মিষ্টি জলের পুকুর পাড়ে বন রক্ষীদের অফিস। অফিসকে পিছনে ফেলে খোলা প্রান্ত এবং ছন বনে পৌঁছে কয়েক শত হরিণ এক সাথে চোখে পড়া খুব সাধারণ ঘটনা । সুন্দরবনের সুন্দরের সঙ্গে ভয়ংকরের নিবিড় সম্পর্ক তাই সতর্ক থাকতে হবে কারণ স্থানটি বেঙ্গল টাইগারের ফুড কোর্টে এবং আসে পাসেই একাধিক ব্যাঘ্র মামার বসবাস। গাইডের নির্দেশ মেনে সুশৃঙ্খলভাবে কিছুটা এগোলে আর একটি মিষ্টি জলেত পুকুর। যে পুকুর হরিণ আবার কখনো বনের রাজার জলের তৃষ্ণা মেটায়। বিস্তীর্ণ এলাকা ছনবন এবং কখনো তাল গাছের নিচে হরিণের বিচরণ আর হয়তো অদূরেই আছে ঘাপটি মেরে থাকা ডোরাকাটা বেঙ্গল টাইগার। উপভোগ্য সময় পার করে সময় থাকলে ফেরার পথ একটু ঘুরে দক্ষিণের বীচ ধরেও আসতে পারেন।
জেটিতে অপেক্ষমাণ নৌকায় করে বাহির প্রান্তের দ্বীপ “ডিমের চর” এর পরের গন্তব্য।
নিকট সমূদ্রের বুকে চরটি যখন নতুন জেগে উঠে তখন ডিম আকৃতির ছিলো বলে এমন নামকরণ। সময় কালে এখন বেশ বড় দ্বীপটির অর্ধ পাশে নদী অন্য অর্ধ সমূদ্র। নদীর পাশের অপরুপ ঠান্ডা বালুর সৈকত ধরে দক্ষিণে হাটলেই মেলে সমূদ্র দর্শন আর মধ্য দ্বীপে গাড় সবুজ কেওড়া বন এবং তার নিচে লাজুক বৃহৎ আকারের হরিণের পাল। পড়ন্ত বিকেল বা প্রথম আলোর নরম রোদের সময় এই অপরূপ সুন্দর দ্বীপ চর ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। জঙ্গলকে দূরে রেখে ইচ্ছে স্বাধীন সময় উপভোগ এবং সৈকত জুড়ে কাঁকড়ার বিচিত্র নকশা দেখে মুগ্ধ তৃপ্তি নিয়ে আদের ভাসমান বাড়ীতে ফেরার পালা।
মোঃতানজির হোসেন রুবেল
১৭ ই অক্টোবর ২০২০
পূর্বের পর্বঃ বেঙ্গল টাইগারের দেশ “সুন্দরবন” ভ্রমণ পরিচিতি (পর্ব-১)